সংস্কারই মূল্যহীন যদি অর্থনীতি ঠিক না হয়
সরকারি চাকরিতে বৈষম্য ছাপিয়ে সার্বিকভাবে অর্থনীতিতে বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার কারণে আগের সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার নানা সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু দুর্বল অর্থনৈতিক কাঠামোর অর্থপূর্ণ সংস্কার না হলে অন্য কোনো রাজনৈতিক বা গণতান্ত্রিক সংস্কার টেকসই হবে না।
আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথ: বৈষম্যহীন বাংলাদেশের সন্ধানে’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ত্রৈমাসিক জার্নাল সর্বজনকথা ও জার্মান-বাংলাদেশ ফোরাম যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে। এতে সভাপ্রধান ছিলেন অর্থনীতিবিদ ও সর্বজনকথার সম্পাদক আনু মুহাম্মদ, স্বাগত বক্তব্য দেন সুজিত চৌধুরী।
দীর্ঘ সময় স্বৈরশাসন থাকলে শাসনকাঠামোতে নানা ধরনের ক্ষত দেখা যায় উল্লেখ করে কল্লোল মোস্তফা বলেন, বাংলাদেশেও সেটি হয়েছে। এই ক্ষত পুরোপুরি না সারিয়ে ওপরে ওপরে শুধু মলম (সংস্কার বোঝাতে) দিয়ে কোনো লাভ হবে না। মানুষ এই সংস্কার গ্রহণ করবে না। তিনি বলেন, সংস্কার করে খুব সুন্দর একটা সংবিধান বানাতে পারেন। কিন্তু সেই সংবিধান খাওয়া-পরার নিশ্চয়তা না দিলে ও অর্থনৈতিক বৈষম্য না কমালে মানুষ তা গ্রহণ করবে না; বরং আরেকটা স্বৈরাচারী শক্তি এসে এসব সংস্কারকে উল্টে দিতে পারে।
সরকারে যে দলই আসুক, রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণের ক্ষমতা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কাছে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেন কল্লোল মোস্তফা। তিনি বলেন, সংসদে ব্যবসায়ী ও তাঁদের প্রতিনিধিরা সবচেয়ে বেশি আসছেন। এ কারণে বিগত সময়ে রাষ্ট্রীয় নীতির মাধ্যমেও লুণ্ঠন হতে দেখা গেছে। এটি অর্থনৈতিক বৈষম্যের একটি বড় কারণ। এখান থেকে সরে আসতে হবে।

Post a Comment